শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

আপডেট
ক্যাম্পাসে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা, আহত দুই শতাধিক

ক্যাম্পাসে ফিরেছেন শিক্ষার্থীরা, আহত দুই শতাধিক

রাবি প্রতিবেদক

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে থেমে থেমে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে দুই পক্ষ। আগুন দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর বাজারের বেশ কয়েকটি দোকানে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় বিনোদপুর গেট পুলিশ বক্স। এছাড়াও দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। রাত ১০টার দিকে পুলিশ টিয়ারশেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ক্যাস্পাসে ফেরেন শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, সংঘর্ষে আমাদের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। তিনি শিক্ষার্থীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বগুড়া থেকে বাসে করে রাজশাহী আসছিলেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। সিটে বসাকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে ঝামেলা হয় একজনের। পরে বাসটি বিনোদপুর বাজারে আসলে বাস আটকে চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে এক দোকানি এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। পরে ওই ব্যক্তির সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

পরে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় দোকানিরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। বাঁশ-লাঠি নিয়ে তারা শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করেন। শিক্ষার্থীরা বিনোদপুর গেট দিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে আবার বিনোদপুর গেটের দিকে লাঠিসোটা নিয়ে দোকানিদের ধাওয়া করেন।

পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থল আসেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া ও তার কয়েকজন অনুসারী। পরে স্থানীয়দের ধাওয়া খেয়ে ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল রেখে চলে যান তারা। এ সময় মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন স্থানীয়রা। পরে দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন তারা। এছাড়াও বিনোদপুর গেট পুলিশ বক্স ও কয়েকটি দোকানে আগুন দেওয়া হয়। মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। বিনোদপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

শিক্ষার্থীরা বলেন, স্থানীয়দের এমন অত্যাচার আমরা মেনে নিতে পারছি না। কিছু হলেই তারা শিক্ষার্থীদের মারছে, প্রতিবাদ করারও সুযোগ দিচ্ছে না। পুলিশও আমাদের ওপর টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এফএম শামীম আহাম্মদ জানান, হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ৪০ জন ভর্তি হয়েছেন। তার মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। তবে ঘটনার পরপরই হাসপাতালে ডাক্তারসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সুলতান উল ইসলাম জানান, আহতদের অনেককে বাসে করে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আগামী রোববার এবং সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

Comments are closed.




দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ © All rights reserved © 2024 Protidiner Kagoj |